হসপিটাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন কেমন হওয়া উচিত: পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
সুস্থতা আর আরামদায়ক চিকিৎসা সেবার জন্য হাসপাতালে শুধু চিকিৎসা সেবার
মান উন্নয়ন করলেই যথেষ্ট নয় বরং একটি সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করাও বেশ
গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হয় একটি পেশাদার ও
হসপিটালের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইন্টেরিয়র ডিজাইনের মাধ্যমে। সঠিক
হাসপাতাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন রোগী, চিকিৎসক ও দর্শনার্থীদের মানসিক
প্রশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
হচ্ছে, একটি সম্পূর্ণ হাসপাতালে অসংখ্য কক্ষ থাকে, প্রত্যেকটির কাজ
ভিন্ন ভিন্ন। আপনি যদি একটি হসপিটাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে চান, তাহলে
আপনাকে প্রতিটি সেকশনের বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে।
আজকের ব্লগে তাই আলোচনা করব, সম্পূর্ণ একটি
হসপিটাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন
কেমন হতে পারে। আলাদাভাবে প্রতিটি ইউনিটের ডিজাইন সম্পর্কেও বিষদ
আলোচনা করা হবে। বিস্তারিত জানতে ব্লগটি ভালোভাবে পড়ুন।
সাধারণত, একটি হাসপাতাল অসংখ্য ইউনিট এর সমন্বয়ে গঠিত। ভিন্ন ভিন্ন
কাজের ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটের প্রয়োজন পড়ে থাকে। একটি হাসপাতালে যা যা
থাকে, তা হলো, কেবিন, ডাক্তার চেম্বার, ICU & CCU, ওয়ার্ড, ব্রেস্ট
ফিডিং রুম, অপারেশন থিয়েটার, ওয়েটিং রুম ইত্যাদি। এছাড়া হসপিটালের জন্য
সঠিক ফার্নিচার নির্বাচন
করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই সেকশনে আমরা প্রতিটি ইউনিট ডিজাইন
সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরছি।
১. কেবিন (Cabin)
উদ্দেশ্য: কেবিন ডিজাইনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ব্যক্তিগত ও
নিরিবিলি চিকিৎসা পরিবেশ নিশ্চিত করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
শান্ত রঙ (হালকা সবুজ, নীল, অফ-হোয়াইট) ব্যবহার করতে পারেন
প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা জরুরি
নন-স্লিপ ফ্লোরিং ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল পেইন্ট ব্যবহার করতে হবে
বেডসাইড কন্ট্রোল, রিডিং লাইট, ছোট টিভি বা মনিটর রাখা যেতে পারে
রোগীর আত্মীয়দের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা করতে হবে
২. ডাক্তার চেম্বার (Doctor’s Chamber)
উদ্দেশ্য: রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে গোপনীয়তা ও সঠিক পরামর্শের
পরিবেশ তৈরি করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
চিকিৎসকের ডেস্ক ও চেয়ার যথেষ্ট আলোযুক্ত এবং স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হতে
হবে
রোগীর বসার স্থান আলাদা ও দূরত্ব বজায় রাখা
ওয়াল-মাউন্টড ক্যাবিনেট বা ড্রয়ার চিকিৎসা সরঞ্জামের জন্য যুক্ত করা
হালকা গ্রে বা সাদা রঙ রোগীর আস্থাবোধ জাগায়
প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজিটাল ডিসপ্লে বা পেশেন্ট রিপোর্ট শেয়ারিং স্ক্রিন
রাখা
৩. আইসিইউ ও সিসিইউ (ICU & CCU)
উদ্দেশ্য: সংকটাপন্ন রোগীর জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং ও
পরিচর্যা নিশ্চিত করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
হাইজিন ও ইনফেকশন কন্ট্রোল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া
গ্লাস পার্টিশনের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল এক্সেস রাখা
উন্নত ভেন্টিলেশন, টেম্পারেচার কন্ট্রোল সহজ করা
জরুরি এক্সিট ও ইমারজেন্সি এক্সেস নিশ্চিত করা
প্রতি রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, মনিটর, সুইচবোর্ড ইন্টিগ্রেটেড
ইউনিট সংযুক্ত করা
৪. ওয়ার্ড (General Ward)
উদ্দেশ্য: বহু রোগীর জন্য কার্যকর, হাইজিনিক এবং সুস্থ পরিবেশ
নিশ্চিত করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
প্রতিটি বেডের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা
পর্দা বা পার্টিশন দিয়ে প্রাইভেসি নিশ্চিত করা
সাদা-সবুজ রঙের মিশ্রণ মানসিক প্রশান্তি দেয়, এই রঙ ব্যাবহার করা
যেতে পারে
সহজে পরিষ্কারযোগ্য এবং অ্যান্টিসেপটিক ফ্লোরিং ব্যবহার করা
কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা
৫. ব্রেস্ট ফিডিং রুম
উদ্দেশ্য: মায়েদের জন্য গোপনীয়, নিরাপদ ও আরামদায়ক দুধ পান
করানোর পরিবেশ।
ডিজাইন আইডিয়া:
রুমটি হতে হবে নিরিবিলি ও সাউন্ডপ্রুফ
কম আলো, হালকা গোলাপি বা অফ-হোয়াইট ওয়াল রাখলে ভালো
সান্নিধ্যবোধ তৈরি করে এমন সোফা বা রেক্লাইনার চেয়ার
উদ্দেশ্য: সংক্রমণ মুক্ত, নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সফল সার্জারি
পরিচালনা করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
হাই-গ্রেড অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফ্লোরিং ও ওয়াল শিট ব্যবহার করতে হবে
স্টেরাইল জোন ও সেমি-স্টেরাইল জোনের বিভাজন করা
অ্যাডভান্সড এয়ার ফিল্টারিং ও পজিটিভ প্রেসার কন্ট্রোল
ঝরঝরে আলোর ব্যবস্থা ও হ্যান্ড-ফ্রি অপারেটিং লাইট ব্যবফার করতে হবে
প্রি ও পোস্ট-অপারেশন ওয়ার্কস্টেশন রাখা
৭. ওয়েটিং এরিয়া (Waiting Area)
উদ্দেশ্য: রোগীর স্বজন বা দর্শনার্থীদের জন্য ধৈর্য ও আরামের
পরিবেশ তৈরি করা।
ডিজাইন আইডিয়া:
পর্যাপ্ত বসার জায়গা এবং সিটের মধ্যে গ্যাপ রাখা
ডিজিটাল ডিসপ্লে: তথ্য, সিরিয়াল, দিকনির্দেশনার ব্যবস্থা রাখা
ইন্ডোর প্লান্টস বা আর্টওয়ার্ক মানসিক প্রশান্তি দেয়, এগুলো ব্যবহার
করা
শিশুদের জন্য ছোট প্লে এরিয়া (যদি শিশু হাসপাতাল হয়)
পর্যাপ্ত আলো ও কুলিং সিস্টেম রাখা
হসপিটাল ইন্টেরিয়র ডিজাইনের গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা
হাসপাতাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও অন্যান্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের মধ্যে বেশ
পার্থক্য রয়েছে। কারণ হাসপাতাল ডিজাইনে বেশ কিছু নীতিমালা মেনে ডিজাইন
করা অত্যাবশকীয়। নিচে দুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতিমালা উল্লেখ করা হলো:
স্যানিটেশন ও হাইজিন: প্রতিটি ইউনিটে সহজে পরিষ্কারযোগ্য
উপকরণ ব্যবহার করতে হবে।
ফাংশনাল লেআউট: রোগী, ডাক্তার, নার্স ও দর্শনার্থীদের জন্য
নিরাপদে চলাচলের ব্যবস্থা।
নীরবতা ও মনঃসংযোগ: সাউন্ড কন্ট্রোল, নন-ডিস্টার্বিং রঙ ও
লাইটিং ব্যবহার।
ইমারজেন্সি রেসপন্স: ফায়ার এক্সিট, স্ট্রেচার মুভমেন্টের পথ
নিশ্চিত করা।
ভিজ্যুয়াল কমফোর্ট: প্রাকৃতিক আলো, উন্মুক্ত জানালা বা শান্ত
ডিজাইন এলিমেন্ট।
পেশাদার ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সাহায্য নিন
হসপিটাল ইন্টেরিয়র ডিজাইন কেবল সৌন্দর্যের বিষয় নয় –
এটি একটি কার্যকর ও মানবিক চিকিৎসা ব্যবস্থার অংশ। পেশাদার ডিজাইন
স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ায়, রোগীর আস্থা গড়ে তোলে এবং সার্বিকভাবে সেবার
অভিজ্ঞতা উন্নত করে। তাই নতুন হাসপাতাল নির্মাণ কিংবা রিনোভেশনের সময়
অভিজ্ঞ ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের সহায়তা নেওয়া আবশ্যক।
Barnomala Architects & Interior, বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ও
দক্ষ ইন্টেরিয়র ডিজাইন সেবা প্রদানকারী।
Barnomala Architects & Interior offers functional, hygienic, and modern hospital interior design services in Bangladesh. Call for service at +8801713776555
Please tell us about your residential home space or commercial space requirements. One of our creative, modern interior designers or interior decorator will walk you through our service options.